ঢাকা ০২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম... সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে...

যুদ্ধের দুই বছর পূর্তি: অনড় পুতিন, কী আছে ইউক্রেনের ভাগ্যে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৫২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৭০ বার পড়া হয়েছে

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। আক্রমণের শুরুতে রাশিয়ার দৃঢ়তা ছিল সেটি মাঝে ভেঙে পড়েছিল। তবে কয়েক মাস আগে থেকেই নিজেদের অবস্থানে ফিরে এসেছে মস্কো। অপরদিকে ইউক্রেনের বিপরীতে কিয়েভের মনোবলে ফাটল ধরেছে। যুদ্ধ এবং পরিকল্পনায় দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অপরদিকে ইউক্রেনকে সাহায্যের দিক দিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো।

ইউক্রেন যুদ্ধের দুই বছর পেরিয়ে গেল, এই যুদ্ধ সহসাই থামবে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কারোর পক্ষ থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো চিহ্নমাত্র নেই। কিয়েভ এ ব্যাপারে একরোখা যে, তাদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানা বজায় থাকতে হবে এবং তারা রাশিয়ান সেনাদের হটিয়ে দেবে। অন্যদিকে মস্কো তাদের অবস্থানে অনড় যে, ইউক্রেন যথাযথ রাষ্ট্র নয় এবং তাদের লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার সামরিক অভিযান চলবে।

যুদ্ধের গতিপথ কী? কবে শেষ হবে, কোন পদ্ধতিতে শেষ হবে— এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। যেটি তুলে ধরা হলো।

কে জিতছে?
শীতকালজুড়ে তীব্র মুখোমুখি লড়াইয়ে দুপক্ষেরই বেশ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন প্রায় ১০০০ কিলোমিটার জুড়ে এবং ২০২২ সালের শরতের পর থেকে এই এলাকায় খুব একটা পরিবর্তন আসেনি।

দুই বছর আগে রাশিয়ার পুরো মাত্রার সামরিক অভিযান শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ান সৈন্যদের রাজধানী কিয়েভ ও উত্তরাঞ্চল থেকে হটিয়ে দিতে সক্ষম হয়। ওই বছরের শেষ দিকে তারা পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলেও দখল করা বড় এলাকা উদ্ধার করে। কিন্তু এ মূহুর্তে রাশিয়ানরা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, আর ইউক্রেনীয়রা বলছেন যে, তাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসছে।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চলা পূর্বাঞ্চলের আভডিভকা শহর থেকে নিজেদের সৈন্যদের সরিয়ে নেয় ইউক্রেন। যেটাকে একটা বড় বিজয় হিসেবে দেখে রাশিয়া। কারণ কৌশলগতভাবে আভডিভকা শহরটি আরও ভেতরে অভিযানের পথ খুলে দিতে পারে।

কিয়েভ জানায়, তারা সৈন্যদের জীবন রক্ষা করতেই তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে এবং তাদের অস্ত্র ও সৈন্য সংখ্যা যে সেখানে অনেক কম ছিল, সেটিও তারা লুকায়নি। গত মে মাসে বাখমুত দখলের পর এটাই ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিজয়। কিন্তু আভডিভকা উত্তর-পশ্চিমের দোনেৎস্ক থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে, ইউক্রেনের যে শহরটি ২০১৪ সাল থেকেই রাশিয়া দখল করে আছে।

তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে লক্ষ্য নিয়ে রাশিয়া অভিযান শুরু করে, মিলিটারি ব্লগার এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা প্রচারণায় বলা হয় মাত্র ‘তিন দিনের মধ্যেই’ রাজধানী কিয়েভ দখল করা হবে, সেই তুলনায় এটা খুবই সামান্য অগ্রগতি।

বর্তমানে ইউক্রেনের ১৮ শতাংশ অঞ্চল রাশিয়ার শক্তির নিয়ন্ত্রণে, যার মধ্যে ২০১৪ সালের মার্চে দখল করা ক্রাইমিয়া এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বিরাট অংশও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটা নতুন ৬০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘরোয়া রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়ে কংগ্রেসে আটকে আছে। আর ইউক্রেনের সমর্থকদের মধ্যে শঙ্কা ভর করেছে যে যদি নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও জিতে আসে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা থমকে যাবে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফেব্রুয়ারিতে নানা আলোচনা ও হাঙ্গেরির সঙ্গে দর কষাকষির পর ৫৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে। হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবান, যিনি পুতিনের ঘনিষ্ঠ, তিনি প্রকাশ্যেই ইউক্রেনকে সহায়তার বিরোধিতা করেন। এ ছাড়া ইইউ মার্চের মধ্যে যে মিলিয়ন আর্টিলারি সরবরাহ করতে চেয়েছে, কিয়েভে সেটার অর্ধেক করতে সমর্থ হবে।

রাশিয়ার সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিবেশী বেলারুশ, যাদের অঞ্চল ও আকাশপথ ব্যবহার করে ইউক্রেনে প্রবেশ করছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ বলছে, ইরান রাশিয়াকে শাহেদ ড্রোন সরবরাহ করছে। যদিও ইরান যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়াকে অল্প কিছু ড্রোন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। মানুষবিহীন উড়ন্ত যান বা ইউএভি কার্যকরভাবে ইউক্রেনের বিভিন্ন লক্ষ্যে আঘাত হানতে সমর্থ হয়েছে। আর এই যুদ্ধে আকাশ প্রতিরক্ষা ফাঁকি দিয়ে হামলার সামর্থ্য থাকায় দুপক্ষ থেকেই ড্রোনের বেশ চাহিদা রয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলো যেভাবে চেয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা সেভাবে কাজ করেনি। রাশিয়া এখনেও যেমন তেল বিক্রি করতে সমর্থ হচ্ছে, তেমনি তাদের সামরিক শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও অন্য দেশ থেকে আনতে পারছে।

চীন অবশ্য কোনো দেশকেই অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে না। তারা যুদ্ধ ঘিরে খুবই সতর্কভাবে তাদের কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা রাশিয়াকে হামলার জন্য নিন্দাও করছে না, আবার মস্কোর সেনাবাহিনীকে সমর্থনও দিচ্ছে না। যদিও তারা এবং ভারত রাশিয়া থেকে নিয়মিত তেল কিনে চলেছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই দেশই উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছেও ধরনা দিয়েছে সমর্থনের জন্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকায় প্রচুর কূটনৈতিক সফর করেছে তারা।

রাশিয়ার লক্ষ্য কি বদলে গেছে?
এখনো বেশিরভাগের বিশ্বাস যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পুরো ইউক্রেন পেতে চান। যুক্তরাষ্ট্রের টকশো উপস্থাপক টাকার কার্লসনের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আবারও এখানকার ইতিহাস ও সংঘাতের ব্যাপারে তার বিতর্কিত মতামত তুলে ধরেন।

তিনি অনেক দিন ধরে কোনোরকম প্রমাণাদি ছাড়াই বলে আসছেন যে ইউক্রেনের সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে পূর্বে দনবাস অঞ্চলের মানুষদের রাশিয়ার নিরাপত্তার দরকার আছে। যুদ্ধের আগে তিনি একটি দীর্ঘ নিবন্ধ লেখেন, যেখানে তিনি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করে বলেন রাশিয়ান এবং ইউক্রেনিয়ান আসলে “একই জনগোষ্ঠী।”

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তিনি বলেন যে, তাদের ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ লক্ষ্য বদল হয়নি এবং নানান অসমর্থিত সূত্রে যে দাবি করা হয় সেখানে চরম ডানপন্থিদের প্রভাব অনেক বেশি, সেখান থেকে বের করে আনতে চান তিনি বা ‘নাৎসিমুক্ত’ করতে চান।

একই সঙ্গে পুতিন বলেন, ইউক্রেনকে তিনি চান ‘সামরিক বাহিনী বিলুপ্ত’ করে একটি ‘নিরপেক্ষ’ দেশ হিসেবে দেখতে এবং একই সঙ্গে নেটো যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে এই অঞ্চলে, সেটির বিরোধিতা করেন তিনি।

রাশিয়া

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

যুদ্ধের দুই বছর পূর্তি: অনড় পুতিন, কী আছে ইউক্রেনের ভাগ্যে

আপডেট সময় : ০৩:৫২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। আক্রমণের শুরুতে রাশিয়ার দৃঢ়তা ছিল সেটি মাঝে ভেঙে পড়েছিল। তবে কয়েক মাস আগে থেকেই নিজেদের অবস্থানে ফিরে এসেছে মস্কো। অপরদিকে ইউক্রেনের বিপরীতে কিয়েভের মনোবলে ফাটল ধরেছে। যুদ্ধ এবং পরিকল্পনায় দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অপরদিকে ইউক্রেনকে সাহায্যের দিক দিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো।

ইউক্রেন যুদ্ধের দুই বছর পেরিয়ে গেল, এই যুদ্ধ সহসাই থামবে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কারোর পক্ষ থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো চিহ্নমাত্র নেই। কিয়েভ এ ব্যাপারে একরোখা যে, তাদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানা বজায় থাকতে হবে এবং তারা রাশিয়ান সেনাদের হটিয়ে দেবে। অন্যদিকে মস্কো তাদের অবস্থানে অনড় যে, ইউক্রেন যথাযথ রাষ্ট্র নয় এবং তাদের লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার সামরিক অভিযান চলবে।

যুদ্ধের গতিপথ কী? কবে শেষ হবে, কোন পদ্ধতিতে শেষ হবে— এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। যেটি তুলে ধরা হলো।

কে জিতছে?
শীতকালজুড়ে তীব্র মুখোমুখি লড়াইয়ে দুপক্ষেরই বেশ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন প্রায় ১০০০ কিলোমিটার জুড়ে এবং ২০২২ সালের শরতের পর থেকে এই এলাকায় খুব একটা পরিবর্তন আসেনি।

দুই বছর আগে রাশিয়ার পুরো মাত্রার সামরিক অভিযান শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই ইউক্রেনীয়রা রাশিয়ান সৈন্যদের রাজধানী কিয়েভ ও উত্তরাঞ্চল থেকে হটিয়ে দিতে সক্ষম হয়। ওই বছরের শেষ দিকে তারা পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলেও দখল করা বড় এলাকা উদ্ধার করে। কিন্তু এ মূহুর্তে রাশিয়ানরা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, আর ইউক্রেনীয়রা বলছেন যে, তাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসছে।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চলা পূর্বাঞ্চলের আভডিভকা শহর থেকে নিজেদের সৈন্যদের সরিয়ে নেয় ইউক্রেন। যেটাকে একটা বড় বিজয় হিসেবে দেখে রাশিয়া। কারণ কৌশলগতভাবে আভডিভকা শহরটি আরও ভেতরে অভিযানের পথ খুলে দিতে পারে।

কিয়েভ জানায়, তারা সৈন্যদের জীবন রক্ষা করতেই তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে এবং তাদের অস্ত্র ও সৈন্য সংখ্যা যে সেখানে অনেক কম ছিল, সেটিও তারা লুকায়নি। গত মে মাসে বাখমুত দখলের পর এটাই ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিজয়। কিন্তু আভডিভকা উত্তর-পশ্চিমের দোনেৎস্ক থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে, ইউক্রেনের যে শহরটি ২০১৪ সাল থেকেই রাশিয়া দখল করে আছে।

তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে লক্ষ্য নিয়ে রাশিয়া অভিযান শুরু করে, মিলিটারি ব্লগার এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা প্রচারণায় বলা হয় মাত্র ‘তিন দিনের মধ্যেই’ রাজধানী কিয়েভ দখল করা হবে, সেই তুলনায় এটা খুবই সামান্য অগ্রগতি।

বর্তমানে ইউক্রেনের ১৮ শতাংশ অঞ্চল রাশিয়ার শক্তির নিয়ন্ত্রণে, যার মধ্যে ২০১৪ সালের মার্চে দখল করা ক্রাইমিয়া এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বিরাট অংশও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটা নতুন ৬০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘরোয়া রাজনীতির মারপ্যাঁচে পড়ে কংগ্রেসে আটকে আছে। আর ইউক্রেনের সমর্থকদের মধ্যে শঙ্কা ভর করেছে যে যদি নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও জিতে আসে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা থমকে যাবে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ফেব্রুয়ারিতে নানা আলোচনা ও হাঙ্গেরির সঙ্গে দর কষাকষির পর ৫৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে। হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবান, যিনি পুতিনের ঘনিষ্ঠ, তিনি প্রকাশ্যেই ইউক্রেনকে সহায়তার বিরোধিতা করেন। এ ছাড়া ইইউ মার্চের মধ্যে যে মিলিয়ন আর্টিলারি সরবরাহ করতে চেয়েছে, কিয়েভে সেটার অর্ধেক করতে সমর্থ হবে।

রাশিয়ার সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিবেশী বেলারুশ, যাদের অঞ্চল ও আকাশপথ ব্যবহার করে ইউক্রেনে প্রবেশ করছে তারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ বলছে, ইরান রাশিয়াকে শাহেদ ড্রোন সরবরাহ করছে। যদিও ইরান যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়াকে অল্প কিছু ড্রোন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। মানুষবিহীন উড়ন্ত যান বা ইউএভি কার্যকরভাবে ইউক্রেনের বিভিন্ন লক্ষ্যে আঘাত হানতে সমর্থ হয়েছে। আর এই যুদ্ধে আকাশ প্রতিরক্ষা ফাঁকি দিয়ে হামলার সামর্থ্য থাকায় দুপক্ষ থেকেই ড্রোনের বেশ চাহিদা রয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলো যেভাবে চেয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা সেভাবে কাজ করেনি। রাশিয়া এখনেও যেমন তেল বিক্রি করতে সমর্থ হচ্ছে, তেমনি তাদের সামরিক শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও অন্য দেশ থেকে আনতে পারছে।

চীন অবশ্য কোনো দেশকেই অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে না। তারা যুদ্ধ ঘিরে খুবই সতর্কভাবে তাদের কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা রাশিয়াকে হামলার জন্য নিন্দাও করছে না, আবার মস্কোর সেনাবাহিনীকে সমর্থনও দিচ্ছে না। যদিও তারা এবং ভারত রাশিয়া থেকে নিয়মিত তেল কিনে চলেছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই দেশই উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছেও ধরনা দিয়েছে সমর্থনের জন্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকায় প্রচুর কূটনৈতিক সফর করেছে তারা।

রাশিয়ার লক্ষ্য কি বদলে গেছে?
এখনো বেশিরভাগের বিশ্বাস যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পুরো ইউক্রেন পেতে চান। যুক্তরাষ্ট্রের টকশো উপস্থাপক টাকার কার্লসনের সঙ্গে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আবারও এখানকার ইতিহাস ও সংঘাতের ব্যাপারে তার বিতর্কিত মতামত তুলে ধরেন।

তিনি অনেক দিন ধরে কোনোরকম প্রমাণাদি ছাড়াই বলে আসছেন যে ইউক্রেনের সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে পূর্বে দনবাস অঞ্চলের মানুষদের রাশিয়ার নিরাপত্তার দরকার আছে। যুদ্ধের আগে তিনি একটি দীর্ঘ নিবন্ধ লেখেন, যেখানে তিনি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করে বলেন রাশিয়ান এবং ইউক্রেনিয়ান আসলে “একই জনগোষ্ঠী।”

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তিনি বলেন যে, তাদের ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ লক্ষ্য বদল হয়নি এবং নানান অসমর্থিত সূত্রে যে দাবি করা হয় সেখানে চরম ডানপন্থিদের প্রভাব অনেক বেশি, সেখান থেকে বের করে আনতে চান তিনি বা ‘নাৎসিমুক্ত’ করতে চান।

একই সঙ্গে পুতিন বলেন, ইউক্রেনকে তিনি চান ‘সামরিক বাহিনী বিলুপ্ত’ করে একটি ‘নিরপেক্ষ’ দেশ হিসেবে দেখতে এবং একই সঙ্গে নেটো যে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে এই অঞ্চলে, সেটির বিরোধিতা করেন তিনি।

রাশিয়া