ঢাকা ০৩:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম... সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে...

জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ: গাজার কোথাও এখন নিরাপদ নয়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৩১:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩৪ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নাসের হাসপাতালে তখন তুমুল হট্টগোল, আর্তচিৎকার ও আহাজারি। বাইরে মানুষের ছিন্নভিন্ন দেহ নিয়ে একের পর এক ছুটে আসছে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক, এমনকি গাধায় টানা গাড়ি। মানুষগুলোর কারও শরীরে প্রাণের স্পন্দন আছে, কেউ একেবারে নিথর। এরই মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে এক শিশুর আবদার, ‘আমার মাকে এনে দাও।’

শিশুটির মা আর কখনো ফিরে আসবেন না। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি স্কুলে গতকাল সোমবার রাতে ইসরায়েলের নারকীয় বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি। স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া হতাহত ব্যক্তিদেরই নিয়ে আসা হয় ওই হাসপাতালে। এমন হামলা ও রক্তক্ষয়ের চিত্র এখন পুরো গাজাজুড়ে। ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক লিন হেস্টিংস আজ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘গাজার কোথাও নিরাপদ নয়, গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা আর বাকি নেই।’
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নাসের হাসপাতালে তখন তুমুল হট্টগোল, আর্তচিৎকার ও আহাজারি। বাইরে মানুষের ছিন্নভিন্ন দেহ নিয়ে একের পর এক ছুটে আসছে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক, এমনকি গাধায় টানা গাড়ি। মানুষগুলোর কারও শরীরে প্রাণের স্পন্দন আছে, কেউ একেবারে নিথর। এরই মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে এক শিশুর আবদার, ‘আমার মাকে এনে দাও।’

শিশুটির মা আর কখনো ফিরে আসবেন না। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি স্কুলে গতকাল সোমবার রাতে ইসরায়েলের নারকীয় বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি। স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া হতাহত ব্যক্তিদেরই নিয়ে আসা হয় ওই হাসপাতালে। এমন হামলা ও রক্তক্ষয়ের চিত্র এখন পুরো গাজাজুড়ে। ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক লিন হেস্টিংস আজ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘গাজার কোথাও নিরাপদ নয়, গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা আর বাকি নেই।’

আসলেই গাজাবাসীর যাওয়ার জায়গা নেই। ইসরায়েলের হুমকির মুখে প্রথমে উপত্যকাটির উত্তর থেকে দক্ষিণে পালাতে হয়েছিল তাঁদের। এবার দক্ষিণ থেকে আরও দক্ষিণে সরতে বলা হচ্ছে। এরই মধ্যে সোমবার থেকে উত্তরের পাশাপাশি দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। পাশাপাশি সংঘাত শুরুর পর থেকে আকাশপথে নির্বিচার বোমাবর্ষণ তো চলছেই।

গত বৃহস্পতিবার গাজায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। এর কয়েক দিন বাদেই দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযান শুরু করল ইসরায়েলি বাহিনী। খান ইউনিসের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ এলাকার পূর্বাংশে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের ট্যাংক প্রবেশ করেছে। সেগুলো বনি সুহাইলা ও হামাদ সিটি এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ইলন লেভি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখন দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধে এগিয়ে চলেছি। এই ধাপ কঠিন হতে চলেছে।’

ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় তাদের অভিযানকে বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত করলেও নৃশংসতা কখনোই কমায়নি। গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৯০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। একই সময় পশ্চিম তীরে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আড়াই শর বেশি। এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের শুরুতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলায় দেশটিতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন।

‘কেয়ামতের’ মতো পরিস্থিতি
গাজার বাসিন্দাদের শোচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক মার্টিন গ্রিফিথসের ভাষ্যমতে, গাজায় ‘কেয়ামতের’ মতো পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। আর জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজার মানুষকে যেখানে চলে যেতে বলা হয়েছে, তার আয়তন পুরো উপত্যকাটির এক-তৃতীয়াংশের কম।

এদিকে মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত গালফ কো–অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সম্মেলনে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছেন। এ নিয়ে নিশ্চুপ থাকায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দুষেছেন তিনি। শেখ তামিম বলেছেন, দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে তাঁর দেশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ: গাজার কোথাও এখন নিরাপদ নয়

আপডেট সময় : ১০:৩১:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নাসের হাসপাতালে তখন তুমুল হট্টগোল, আর্তচিৎকার ও আহাজারি। বাইরে মানুষের ছিন্নভিন্ন দেহ নিয়ে একের পর এক ছুটে আসছে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক, এমনকি গাধায় টানা গাড়ি। মানুষগুলোর কারও শরীরে প্রাণের স্পন্দন আছে, কেউ একেবারে নিথর। এরই মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে এক শিশুর আবদার, ‘আমার মাকে এনে দাও।’

শিশুটির মা আর কখনো ফিরে আসবেন না। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি স্কুলে গতকাল সোমবার রাতে ইসরায়েলের নারকীয় বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি। স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া হতাহত ব্যক্তিদেরই নিয়ে আসা হয় ওই হাসপাতালে। এমন হামলা ও রক্তক্ষয়ের চিত্র এখন পুরো গাজাজুড়ে। ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক লিন হেস্টিংস আজ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘গাজার কোথাও নিরাপদ নয়, গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা আর বাকি নেই।’
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নাসের হাসপাতালে তখন তুমুল হট্টগোল, আর্তচিৎকার ও আহাজারি। বাইরে মানুষের ছিন্নভিন্ন দেহ নিয়ে একের পর এক ছুটে আসছে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক, এমনকি গাধায় টানা গাড়ি। মানুষগুলোর কারও শরীরে প্রাণের স্পন্দন আছে, কেউ একেবারে নিথর। এরই মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে এক শিশুর আবদার, ‘আমার মাকে এনে দাও।’

শিশুটির মা আর কখনো ফিরে আসবেন না। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি স্কুলে গতকাল সোমবার রাতে ইসরায়েলের নারকীয় বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি। স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া হতাহত ব্যক্তিদেরই নিয়ে আসা হয় ওই হাসপাতালে। এমন হামলা ও রক্তক্ষয়ের চিত্র এখন পুরো গাজাজুড়ে। ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক লিন হেস্টিংস আজ মঙ্গলবার বলেছেন, ‘গাজার কোথাও নিরাপদ নয়, গাজাবাসীর আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা আর বাকি নেই।’

আসলেই গাজাবাসীর যাওয়ার জায়গা নেই। ইসরায়েলের হুমকির মুখে প্রথমে উপত্যকাটির উত্তর থেকে দক্ষিণে পালাতে হয়েছিল তাঁদের। এবার দক্ষিণ থেকে আরও দক্ষিণে সরতে বলা হচ্ছে। এরই মধ্যে সোমবার থেকে উত্তরের পাশাপাশি দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। পাশাপাশি সংঘাত শুরুর পর থেকে আকাশপথে নির্বিচার বোমাবর্ষণ তো চলছেই।

গত বৃহস্পতিবার গাজায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। এর কয়েক দিন বাদেই দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযান শুরু করল ইসরায়েলি বাহিনী। খান ইউনিসের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ এলাকার পূর্বাংশে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের ট্যাংক প্রবেশ করেছে। সেগুলো বনি সুহাইলা ও হামাদ সিটি এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ইলন লেভি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখন দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধে এগিয়ে চলেছি। এই ধাপ কঠিন হতে চলেছে।’

ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় তাদের অভিযানকে বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত করলেও নৃশংসতা কখনোই কমায়নি। গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৯০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। একই সময় পশ্চিম তীরে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আড়াই শর বেশি। এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের শুরুতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলায় দেশটিতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন।

‘কেয়ামতের’ মতো পরিস্থিতি
গাজার বাসিন্দাদের শোচনীয় অবস্থার কথা তুলে ধরেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক মার্টিন গ্রিফিথসের ভাষ্যমতে, গাজায় ‘কেয়ামতের’ মতো পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। আর জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজার মানুষকে যেখানে চলে যেতে বলা হয়েছে, তার আয়তন পুরো উপত্যকাটির এক-তৃতীয়াংশের কম।

এদিকে মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত গালফ কো–অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সম্মেলনে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছেন। এ নিয়ে নিশ্চুপ থাকায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দুষেছেন তিনি। শেখ তামিম বলেছেন, দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে তাঁর দেশ।