ঢাকা ০৮:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম... সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে...

জর্ডানে হামলায় নিহত তিন মার্কিন সেনার নাম প্রকাশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৩:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র সরকার জর্ডান সীমান্তে ড্রোন হামলায় রোববার নিহত তিন মার্কিন সেনার নাম প্রকাশ করেছে। তারা হলেন, সার্জেন্ট উইলিয়াম জেরোমি রিভার্স (৪৬), বিশেষজ্ঞ কেনেডি লেডন স্যান্ডার্স (২৪) এবং বিশেষজ্ঞ ব্রিয়োন্না অ্যালেক্সোনদ্রিয়া মোফেট (২৩)। নিজেদের ঘাঁটিতে থাকাবস্থায় ড্রোন হামলায় নিহত হন তারা।

যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার জন্য ইরান সমর্থিত গ্রুপগুলোকে দায়ী করেছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, এটা হেজবুল্লাহর ‘পদাঙ্ক’ অনুসরণ করে করা।

অবশ্য পেন্টাগন এটি পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, ইরানের সাথে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র ।

“আমরা যুদ্ধ চাই না, কিন্তু আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো এবং আমাদের বাহিনীর উপর হামলার উত্তর দেবো”, জানিয়েছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং।
যুক্তরাষ্ট্রের অংশীজন সিবিএস নিউজ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে, এই হামলায় যে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে তা ইরানে নির্মিত বলে মনে হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা ইঙ্গিত করেছেন এটা ‘শাহেদ ড্রোনের ধরন’। এটা একমুখী হামলার ড্রোন যা ইরান রাশিয়াকে দিয়েছে।

তবে এই হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী দলগুলোকে সহায়তার যে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।

পেন্টাগন জানিয়েছে, রোববার সকালে নিহত তিন সৈনিক জর্জিয়া রাজ্যের ফোর্ট মুরের একটি সেনা ইউনিট থেকে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনা রিজার্ভ কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোডি ড্যানিয়েলস, নিহত সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।

“সেনাবাহিনীর পক্ষে, আমি তাদের বন্ধু, পরিবার এবং প্রিয়জনদের সাথে দুঃখ ভাগ করে নিচ্ছি। তাদের অবদান এবং ত্যাগ ভোলার নয়। এবং এই ট্রাজেডির পর যারা আছেন তাদের আমরা পূর্ণ সমর্থন দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ”, বলেন জেনারেল ড্যানিয়েলস।

সিরিয়া সীমান্তের কাছে উত্তর -পূর্ব জর্ডানের রুকবানে এই ড্রোন হামলা হয়েছে। পরে এই বেইজের নামকরণ টাওয়ার ২২ করে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ।

রোববার সকালে কন্টেইনার ঘাঁটিতে মনুষ্যবিহীন এই ড্রোন হামলায় ৪০ জনের বেশি সামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছে।

হামলার সময় ‘টাওয়ার ২২’ তে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলো বন্ধ রাখা হয়েছিলো বলে সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। যখন একটি মার্কিন ড্রোন সেনাঘাঁটির দিকে ফিরে আসছিল তখনই হামলাকারী ড্রোনটিও আঘাত হানে।

তারা আরো জানিয়েছেন, কোনো সতর্কতা ছাড়াই যখন ড্রোন হামলা হয় সৈনিকেরা তখন তাদের বিমান ছাউনিতে ঘুমানোর কোয়ার্টারে ছিল।

এ হামলায় সন্দেহভাজন গোষ্ঠীগুলোর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি জানিয়েছেন যে, “প্রতিরোধ দলগুলো কীভাবে ফিলিস্তিনিদের বা নিজেদের ভূ-খণ্ডকে রক্ষা করবে সে সিদ্ধান্তের গ্রহণের সাথে তারা যুক্ত নয়।

ইরানের ইন্টেলিজেন্স বিষয়ক মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব বলেছেন যে, ইরানের সাথে জোটবদ্ধ আঞ্চলিক সশস্ত্র দলগুলো ‘আমেরিকান আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে নিজস্ব বিবেচনার ভিত্তিতে জবাব দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “সবকিছুর জন্য যারা দায়ী তাদের জবাবদিহি করতে হবে এবং তা আমাদের ঠিক করা উপায়েই করতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন বলেছেন, তিনি এবং মি. বাইডেন আমেরিকান বাহিনীর ওপর হামলার বিরুদ্ধে ‘প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা’ নেবেন।

ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স এই হামলা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে।

২০২৩ সালে ইরাকভিত্তিক এই সশস্ত্র আমব্রেলা গ্রুপের আবির্ভাব ঘটে, যার সাথে ইরানি মিলিশিয়াদের সম্পৃক্ততার আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর ওপর সাম্প্রতিক হামলাগুলো দায় তারা স্বীকার করেছে।

এক বিবৃতিতে এই গ্রুপ জানিয়েছে যে, তারা সিরিয়াতে শাদ্দাদি, তানফ এবং রুকবানে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ঘাঁটি টার্গেট করেছিলো। যদিও রুকবান সিরিয়ার পার্শ্ববর্তী জর্ডান সীমান্তে পড়েছে। এই গ্রুপটি আরো বলেছে যে, তারা ভূমধ্যসাগরে একটি ইসরায়েলি তেলের স্থাপনাকে ও টার্গেট করেছিলো।

গত সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর ওই অঞ্চলে এই প্রথম কোনো মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মতে, এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে আরো হামলা হয়েছে কিন্তু রোববারের আগে কোনো প্রাণহানি হয়নি।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৭ অক্টোবর থেকে ইরাক এবং সিরিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সাইটগুলোতে ১৬৫ বার হামলা হয়েছে।

গত মাসে উত্তর ইরাকের একটি ঘাঁটিতে তাদের তিন সেনা আহত ও একজন গুরুতর আহত হওয়ার পর ইরান সমর্থিত এই দলগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

জানুয়ারির শুরুতে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় বাগদাদে এক মিলিশিয়া নেতা নিহত হন যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জর্ডানে হামলায় নিহত তিন মার্কিন সেনার নাম প্রকাশ

আপডেট সময় : ০৩:৫৩:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র সরকার জর্ডান সীমান্তে ড্রোন হামলায় রোববার নিহত তিন মার্কিন সেনার নাম প্রকাশ করেছে। তারা হলেন, সার্জেন্ট উইলিয়াম জেরোমি রিভার্স (৪৬), বিশেষজ্ঞ কেনেডি লেডন স্যান্ডার্স (২৪) এবং বিশেষজ্ঞ ব্রিয়োন্না অ্যালেক্সোনদ্রিয়া মোফেট (২৩)। নিজেদের ঘাঁটিতে থাকাবস্থায় ড্রোন হামলায় নিহত হন তারা।

যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার জন্য ইরান সমর্থিত গ্রুপগুলোকে দায়ী করেছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, এটা হেজবুল্লাহর ‘পদাঙ্ক’ অনুসরণ করে করা।

অবশ্য পেন্টাগন এটি পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, ইরানের সাথে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র ।

“আমরা যুদ্ধ চাই না, কিন্তু আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো এবং আমাদের বাহিনীর উপর হামলার উত্তর দেবো”, জানিয়েছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং।
যুক্তরাষ্ট্রের অংশীজন সিবিএস নিউজ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে, এই হামলায় যে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে তা ইরানে নির্মিত বলে মনে হচ্ছে।

ওই কর্মকর্তা ইঙ্গিত করেছেন এটা ‘শাহেদ ড্রোনের ধরন’। এটা একমুখী হামলার ড্রোন যা ইরান রাশিয়াকে দিয়েছে।

তবে এই হামলায় জড়িত সন্ত্রাসী দলগুলোকে সহায়তার যে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।

পেন্টাগন জানিয়েছে, রোববার সকালে নিহত তিন সৈনিক জর্জিয়া রাজ্যের ফোর্ট মুরের একটি সেনা ইউনিট থেকে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনা রিজার্ভ কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোডি ড্যানিয়েলস, নিহত সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন।

“সেনাবাহিনীর পক্ষে, আমি তাদের বন্ধু, পরিবার এবং প্রিয়জনদের সাথে দুঃখ ভাগ করে নিচ্ছি। তাদের অবদান এবং ত্যাগ ভোলার নয়। এবং এই ট্রাজেডির পর যারা আছেন তাদের আমরা পূর্ণ সমর্থন দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ”, বলেন জেনারেল ড্যানিয়েলস।

সিরিয়া সীমান্তের কাছে উত্তর -পূর্ব জর্ডানের রুকবানে এই ড্রোন হামলা হয়েছে। পরে এই বেইজের নামকরণ টাওয়ার ২২ করে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ।

রোববার সকালে কন্টেইনার ঘাঁটিতে মনুষ্যবিহীন এই ড্রোন হামলায় ৪০ জনের বেশি সামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছে।

হামলার সময় ‘টাওয়ার ২২’ তে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলো বন্ধ রাখা হয়েছিলো বলে সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। যখন একটি মার্কিন ড্রোন সেনাঘাঁটির দিকে ফিরে আসছিল তখনই হামলাকারী ড্রোনটিও আঘাত হানে।

তারা আরো জানিয়েছেন, কোনো সতর্কতা ছাড়াই যখন ড্রোন হামলা হয় সৈনিকেরা তখন তাদের বিমান ছাউনিতে ঘুমানোর কোয়ার্টারে ছিল।

এ হামলায় সন্দেহভাজন গোষ্ঠীগুলোর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি জানিয়েছেন যে, “প্রতিরোধ দলগুলো কীভাবে ফিলিস্তিনিদের বা নিজেদের ভূ-খণ্ডকে রক্ষা করবে সে সিদ্ধান্তের গ্রহণের সাথে তারা যুক্ত নয়।

ইরানের ইন্টেলিজেন্স বিষয়ক মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব বলেছেন যে, ইরানের সাথে জোটবদ্ধ আঞ্চলিক সশস্ত্র দলগুলো ‘আমেরিকান আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে নিজস্ব বিবেচনার ভিত্তিতে জবাব দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “সবকিছুর জন্য যারা দায়ী তাদের জবাবদিহি করতে হবে এবং তা আমাদের ঠিক করা উপায়েই করতে হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সেক্রেটারি লয়েড অস্টিন বলেছেন, তিনি এবং মি. বাইডেন আমেরিকান বাহিনীর ওপর হামলার বিরুদ্ধে ‘প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা’ নেবেন।

ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স এই হামলা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে।

২০২৩ সালে ইরাকভিত্তিক এই সশস্ত্র আমব্রেলা গ্রুপের আবির্ভাব ঘটে, যার সাথে ইরানি মিলিশিয়াদের সম্পৃক্ততার আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর ওপর সাম্প্রতিক হামলাগুলো দায় তারা স্বীকার করেছে।

এক বিবৃতিতে এই গ্রুপ জানিয়েছে যে, তারা সিরিয়াতে শাদ্দাদি, তানফ এবং রুকবানে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ঘাঁটি টার্গেট করেছিলো। যদিও রুকবান সিরিয়ার পার্শ্ববর্তী জর্ডান সীমান্তে পড়েছে। এই গ্রুপটি আরো বলেছে যে, তারা ভূমধ্যসাগরে একটি ইসরায়েলি তেলের স্থাপনাকে ও টার্গেট করেছিলো।

গত সাতই অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর ওই অঞ্চলে এই প্রথম কোনো মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মতে, এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে আরো হামলা হয়েছে কিন্তু রোববারের আগে কোনো প্রাণহানি হয়নি।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৭ অক্টোবর থেকে ইরাক এবং সিরিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সাইটগুলোতে ১৬৫ বার হামলা হয়েছে।

গত মাসে উত্তর ইরাকের একটি ঘাঁটিতে তাদের তিন সেনা আহত ও একজন গুরুতর আহত হওয়ার পর ইরান সমর্থিত এই দলগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

জানুয়ারির শুরুতে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় বাগদাদে এক মিলিশিয়া নেতা নিহত হন যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন।