ঢাকা ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম... সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে...

নতুন বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না বিদেশিরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬৬ বার পড়া হয়েছে

বর্তমানে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমে গেছে। কারণ, বিদেশিরা এ দেশে নতুন বিনিয়োগে তেমন আস্থা পাচ্ছেন না। ব্যবসা সহজীকরণে পিছিয়ে থাকা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা, তথ্যের ঘাটতি, দক্ষ শ্রমিকের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বিদেশিরা এ দেশে মূলধনি বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে না। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।

বাংলাদেশে এফডিআইয়ের বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা। সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) গতকাল মঙ্গলবার এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক কমেছে। অন্যদিকে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। অথচ দেশের বর্তমান বাস্তবতায় বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বেশি দরকার। বর্তমানে বিদেশিদের মূলধনি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক কমে গেছে উল্লেখ করে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিদেশিরা এখন নতুন বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছে না। কেন এমনটা হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে।

সম্প্রতি জাপানের বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক সংস্থা জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী জাপানি কোম্পানিগুলোর ওপর করা একটি জরিপের তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ লাভজনক এবং তাঁরা এ দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী। কিন্তু জরিপে অংশ নেওয়া ৭১ শতাংশ জাপানি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের বিষয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।

বিষয়টি উল্লেখ করে অপর প্যানেল আলোচক জাপান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবদুল হক বলেন, বিনিয়োগকারীদের অনাস্থার এই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসচিব নাহিদ রশিদ বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগ। তবে অনেক উদ্যোগ সত্ত্বেও আমাদের কাঙ্ক্ষিত এফডিআই আসছে না।’ এর পেছনে ব্যবসা সহজীকরণে পিছিয়ে থাকা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি, কাঠামোগত দুর্বলতা, ছোট বাজার, দক্ষ শ্রমিকের অভাব ইত্যাদি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান, দক্ষতা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ—মডেল অনুসরণ করা হলে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়াবে।

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরাত দিয়ে বিডার পরিচালক মো. আরিফুল হক জানান, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সার্বিক বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও মূলধনি বিনিয়োগ কমেছে। এই চিত্র রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) ও ইপিজেড–বহির্ভূত উভয় ক্ষেত্রে দেখা গেছে। বেশির ভাগ বিদেশি বিনিয়োগই হয়েছে পুনর্বিনিয়োগ আকারে।

ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির। এ ছাড়া আইসিএবি সভাপতি মনিরুজ্জামান ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নতুন বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না বিদেশিরা

আপডেট সময় : ০৫:৪৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বর্তমানে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমে গেছে। কারণ, বিদেশিরা এ দেশে নতুন বিনিয়োগে তেমন আস্থা পাচ্ছেন না। ব্যবসা সহজীকরণে পিছিয়ে থাকা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা, তথ্যের ঘাটতি, দক্ষ শ্রমিকের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বিদেশিরা এ দেশে মূলধনি বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে না। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হলে এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।

বাংলাদেশে এফডিআইয়ের বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এ পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা। সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) গতকাল মঙ্গলবার এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

ওয়েবিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক কমেছে। অন্যদিকে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। অথচ দেশের বর্তমান বাস্তবতায় বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বেশি দরকার। বর্তমানে বিদেশিদের মূলধনি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক কমে গেছে উল্লেখ করে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিদেশিরা এখন নতুন বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছে না। কেন এমনটা হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করতে হবে।

সম্প্রতি জাপানের বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক সংস্থা জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এ দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী জাপানি কোম্পানিগুলোর ওপর করা একটি জরিপের তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ লাভজনক এবং তাঁরা এ দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী। কিন্তু জরিপে অংশ নেওয়া ৭১ শতাংশ জাপানি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশের বিষয়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।

বিষয়টি উল্লেখ করে অপর প্যানেল আলোচক জাপান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবদুল হক বলেন, বিনিয়োগকারীদের অনাস্থার এই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসচিব নাহিদ রশিদ বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগ। তবে অনেক উদ্যোগ সত্ত্বেও আমাদের কাঙ্ক্ষিত এফডিআই আসছে না।’ এর পেছনে ব্যবসা সহজীকরণে পিছিয়ে থাকা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি, কাঠামোগত দুর্বলতা, ছোট বাজার, দক্ষ শ্রমিকের অভাব ইত্যাদি কারণ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান, দক্ষতা ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ—মডেল অনুসরণ করা হলে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়াবে।

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরাত দিয়ে বিডার পরিচালক মো. আরিফুল হক জানান, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সার্বিক বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও মূলধনি বিনিয়োগ কমেছে। এই চিত্র রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) ও ইপিজেড–বহির্ভূত উভয় ক্ষেত্রে দেখা গেছে। বেশির ভাগ বিদেশি বিনিয়োগই হয়েছে পুনর্বিনিয়োগ আকারে।

ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির। এ ছাড়া আইসিএবি সভাপতি মনিরুজ্জামান ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন।