ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞপ্তি ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম... সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে...

সেতু ভেঙে সাত বছর ধরে ভোগান্তি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৬৪ বার পড়া হয়েছে

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মিরারভিটা গ্রামে বেরুবাড়ীর ছড়ার (ছোট নদী) ওপর নির্মিত সেতুটি সাত বছর ভেঙে পড়ে রয়েছে। এতে উপজেলা শহরের সঙ্গে সেতুর পূর্ব পাশের ছয়টি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে কাঠের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন ওই এলাকার মানুষ। যানবাহন চলাচল না করায় ভোগান্তিতে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার আগে বেরুবাড়ীর ছড়ার ওপর প্রায় ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মিত হয়। ২০১৬ সালে শুষ্ক মৌসুমে ট্রাক্টরের ধাক্কায় সেতুর পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই বছর ভূমিকম্পে সেতুর পশ্চিম দিকের ২০ মিটার এবং পূর্ব দিকের ১০ মিটার দেবে গিয়ে ভেঙে যায়। উপজেলা শহর ও বেরুবাড়ী ইউনিয়নের সঙ্গে সেতুর পূর্ব পাশের আকন্দ পাড়া, চর শালমারা, চর বেরুবাড়ী, হাজিপাড়া, সরকারপাড়া, মন্ডল পাড়া গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন এসব গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ।
২০১৭ সালে বেরুবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় স্থানীয় লোকজন ওই সেতুর ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেন। কাঠের সাঁকোটি সংস্কার না করায় সেটিও ভেঙে যায়। এ বছরের বন্যায় সেতুর একটি অংশ দেবে গিয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তবে বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে হাজারো মানুষ চলাচল করছেন।

গত রোববার গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটির ওপরে জোড়াতালি দেওয়া ভাঙা কাঠের তক্তা দেওয়া। ঝুঁকি নিয়ে অনেকে পার হচ্ছেন। কয়েকজন জানান, যানবাহন নিয়ে উপজেলা শহরে যেতে হলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হয়। এতে তাঁদের অর্থ ও সময়ের অপচয় হয়।
বেরুবাড়ী বাজার হয়ে উপজেলা শহরে অফিস-আদালতে যেতে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। স্থানীয় মিরারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর বেরুবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাগেশ্বরী মহিলা সরকারি কলেজ, নাগেশ্বরী সরকারি কলেজ এবং ওই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন।

নাগেশ্বরী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ার পর থেকে স্কুল-কলেজ যেতে ভোগান্তি বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরে কলেজে যেতে হচ্ছে। এতে সময় বেশি লাগে। অনেকেই ঝুঁকি নিয়েই ভাঙা কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হন। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুটি দ্রুত মেরামত করা হলে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অনেক উপকার হবে।
বেরুবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান সোলায়মান আলী বলেন, বেহাল সেতুর কারণে তাঁর ইউনিয়নের প্রায় সাত হাজার মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। সেতুটি নির্মাণের জন্য উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ে এবং নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। তাঁরা দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন।

উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী ওয়াসিম আতহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সেতুটি মেরামতের প্রস্তাব পেয়ে সেতুটি পরিদর্শন করেছি। সেতুটি যে রাস্তার ওপর অবস্থিত, সেটি এলজিইডির আইডিভুক্ত নয়। তাই সেতুটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ওই সেতুসহ উপজেলার ২৩৬টি রাস্তাকে আইডিভুক্ত করার জন্য তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। রাস্তাটি আইডিভুক্ত হলে রাস্তা ও সেতুর কাজ করা হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সেতু ভেঙে সাত বছর ধরে ভোগান্তি

আপডেট সময় : ০৫:০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার মিরারভিটা গ্রামে বেরুবাড়ীর ছড়ার (ছোট নদী) ওপর নির্মিত সেতুটি সাত বছর ভেঙে পড়ে রয়েছে। এতে উপজেলা শহরের সঙ্গে সেতুর পূর্ব পাশের ছয়টি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে কাঠের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছেন ওই এলাকার মানুষ। যানবাহন চলাচল না করায় ভোগান্তিতে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার আগে বেরুবাড়ীর ছড়ার ওপর প্রায় ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মিত হয়। ২০১৬ সালে শুষ্ক মৌসুমে ট্রাক্টরের ধাক্কায় সেতুর পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই বছর ভূমিকম্পে সেতুর পশ্চিম দিকের ২০ মিটার এবং পূর্ব দিকের ১০ মিটার দেবে গিয়ে ভেঙে যায়। উপজেলা শহর ও বেরুবাড়ী ইউনিয়নের সঙ্গে সেতুর পূর্ব পাশের আকন্দ পাড়া, চর শালমারা, চর বেরুবাড়ী, হাজিপাড়া, সরকারপাড়া, মন্ডল পাড়া গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন এসব গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ।
২০১৭ সালে বেরুবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় স্থানীয় লোকজন ওই সেতুর ওপর একটি কাঠের সাঁকো নির্মাণ করেন। কাঠের সাঁকোটি সংস্কার না করায় সেটিও ভেঙে যায়। এ বছরের বন্যায় সেতুর একটি অংশ দেবে গিয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তবে বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে হাজারো মানুষ চলাচল করছেন।

গত রোববার গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটির ওপরে জোড়াতালি দেওয়া ভাঙা কাঠের তক্তা দেওয়া। ঝুঁকি নিয়ে অনেকে পার হচ্ছেন। কয়েকজন জানান, যানবাহন নিয়ে উপজেলা শহরে যেতে হলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হয়। এতে তাঁদের অর্থ ও সময়ের অপচয় হয়।
বেরুবাড়ী বাজার হয়ে উপজেলা শহরে অফিস-আদালতে যেতে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়। স্থানীয় মিরারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর বেরুবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাগেশ্বরী মহিলা সরকারি কলেজ, নাগেশ্বরী সরকারি কলেজ এবং ওই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন।

নাগেশ্বরী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ার পর থেকে স্কুল-কলেজ যেতে ভোগান্তি বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরে কলেজে যেতে হচ্ছে। এতে সময় বেশি লাগে। অনেকেই ঝুঁকি নিয়েই ভাঙা কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার হন। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুটি দ্রুত মেরামত করা হলে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অনেক উপকার হবে।
বেরুবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান সোলায়মান আলী বলেন, বেহাল সেতুর কারণে তাঁর ইউনিয়নের প্রায় সাত হাজার মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। সেতুটি নির্মাণের জন্য উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ে এবং নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। তাঁরা দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন।

উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী ওয়াসিম আতহার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে সেতুটি মেরামতের প্রস্তাব পেয়ে সেতুটি পরিদর্শন করেছি। সেতুটি যে রাস্তার ওপর অবস্থিত, সেটি এলজিইডির আইডিভুক্ত নয়। তাই সেতুটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ওই সেতুসহ উপজেলার ২৩৬টি রাস্তাকে আইডিভুক্ত করার জন্য তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। রাস্তাটি আইডিভুক্ত হলে রাস্তা ও সেতুর কাজ করা হবে।’