ড. ইউনূসের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কি পরিকল্পনা
- আপডেট সময় : ০৮:৩১:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৮৫ বার পড়া হয়েছে
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বৈঠক হওয়ার আলোচনায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়া উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অধিবেশনের ফাঁকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস আয়োজিত ‘ক্লাইমেট-ফরোয়ার্ড’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘ ২৫ মিনিট কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে সঞ্চালক প্রধান উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করেন, আপনার নির্বাচন করার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “আমাকে দেখে কি আপনার মনে হয় আমি নির্বাচন করব? আমি নির্বাচন করব না।”
সঞ্চালক তখন তাকে আবারও প্রশ্নের ধরনে বলেন, “তাহলে আপনার নির্বাচন করার কোনো সম্ভাবনাই নেই?” ইউনূস বলেন, “না, না কোনোভাবেই নয়।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘‘কেন নয়। যদি তিনি অপরাধ করে থাকেন তাহলে তাকে অবশ্যই ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আপনি নিজেই বিচারের কথা বলছেন। তারও বিচারের মুখোমুখি হওয়া উচিত।”
নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সাবেক সরকার দেশের বিচার বিভাগ, পুলিশ, নির্বাচন কমিশনসহ সব ব্যবস্থা নষ্ট করে দিয়ে গেছে। এসব ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাদের তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কমিশনগুলোর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর তাদের পরামর্শ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর সবাই যখন একটি ঐকমত্যে পৌঁছাবে, তখনই নির্বাচন আয়োজন করা হবে। আর এই কাজটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা আারো বলেন, ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন চালানোর যে দাবি করা হচ্ছে তা ঠিক নয় । তিনি বলেন, যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে তারা চলে গেছে। আর যারা আছে তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
ড. ইউনূসের সঙ্গে বিরল বৈঠকে অংশ নিয়ে জো বাইডেন সারা বিশ্বের কাছে বার্তা দিয়েছেন, বাংলাদেশের পাশে জোরালোভাবে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া সামান্থা পাওয়ার ও অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, এই আলোচনাগুলোর মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের অন্যান্য দেশ এবং জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোকে সামনের দিনগুলোয় বাংলাদেশকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে আস্থা জোগাবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সহায়তার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন, যেখানে অংশগ্রহণমূলক, গণতান্ত্রিক এবং বাংলাদেশির ন্যায়সংগত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে। ড. ইউনূস ও ব্লিঙ্কেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শ্রম অধিকারের প্রতি সম্মান, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের মানবাধিকার রক্ষা এবং রোহিঙ্গা ও সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষায় শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ার গুরুত্বের বিষয়টি আলোচনা করেন।
সূত্র: নিউইয়র্ক