জনসভায় যোগ দিতে বরগুনা থেকে চট্টগ্রামে ‘নৌকার মাঝি’ হুমায়ূন কবির

- আপডেট সময় : ১২:৫৫:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ৩১ বার পড়া হয়েছে
তিনি পেশায় পরিবহন ব্যবসায়ী। বরগুনা জেলার কয়েকটি রুটে তাঁর বাস রয়েছে। রাজনীতি তাঁর নেশা। আওয়ামী লীগ অন্তপ্রাণ। এ কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বড় বড় জনসভায় ছুটে যান মো. হুমায়ূন কবির।
নৌকা নিয়ে ছুটে যান এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের খবর শুনে তিন দিন আগে বরগুনা থেকে ছুটে আসেন তিনি। একটা পিকআপের ওপর কাঠের নৌকা বেঁধে তার ওপর বসেন হুমায়ূন কবির। এভাবেই তিনি জনসভায় আসেন।
হুমায়ূন কবিরকে পাওয়া যায় জনসভাস্থল কেইপিজেড মাঠের সামনের সড়কে। পিকআপের ওপর বাঁধা কাঠের নৌকায় তিনি বসে আছেন। সেখান থেকে জনসভার মঞ্চ দেখা যাচ্ছে। ছাউনি দেওয়া নৌকার একপাশে একটা বইঠাও আছে। ছাউনির নিচে মাদুর পাতা রয়েছে। সেখানেই তিনি বসেন ও ঘুমান।
পিকআপের চারপাশে ব্যানারে হুমায়ূন কবিরের পরিচয় লেখা রয়েছে। সেখানে তাঁর নামের পাশে ব্র্যাকেটে লেখা আছে—‘নৌকার মাঝি’। আরও লেখা আছে—‘বরগুনা জেলা যুবলীগের সহসভাপতি’ ও ‘বরগুনা জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক’।
পিকআপের ভেতর একটা সিঁড়ি রয়েছে। ওই সিঁড়ি দিয়ে নৌকায় ওঠানামা করেন। হুমায়ূন কবিরের সঙ্গে কথা হয় নৌকাটির ওপর।
হুমায়ূন কবির বলেন, তিনি পারিবারিকভাবে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর রক্তে বঙ্গবন্ধুপ্রীতি। তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার মিয়া বরগুনা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। সবাই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নিজে ১৯৯৯ সাল থেকে দুবার বরগুনা পৌরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। শেখ হাসিনার বড় কোনো সভা সমাবেশের খবর পেলেই ছুটে যান তিনি।
চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধনের খবর শোনার পর এখানে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা নেন। সে অনুযায়ী একটা পিকআপ ভাড়া করেন। সেটাতে তাঁর কাঠের নৌকাটি বাঁধেন। নৌকা বাঁধার জন্য স্থানীয়ভাবে লোহার ফ্রেম বানানো হয়। গাড়িচালক মেহেদী হাসান।
মেহেদী বলেন, ২৩ অক্টোবর তাঁরা তিনজন বরগুনা থেকে রওনা দেন। ২৪ অক্টোবর টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে হুমায়ূন কবির বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করেন। ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে পৌঁছান। এরপর চলে যান আনোয়ারায়। সেখানে পিকআপে বাঁধা মাইকে প্রচারণা চালান হুমায়ূন কবির।
এর আগে হুমায়ূন কবির পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময়ও সেখানে ছুটে যান। এবার সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তাঁর ভাইপো মো. স্বাধীনকে।
পঞ্চাশোর্ধ হুমায়ূন কবির বলেন, ‘৩০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সভা সমাবেশে যাচ্ছি। দূরের সমাবেশে কয়েক দিনের জন্য চলে যাই। গাড়িতে নৌকার মধ্যে থাকি। প্রচার করি। নিজের টাকা খরচ করে এ কাজ করি; তবে কোনো স্বীকৃতির জন্য নয়।’
বরগুনা থেকে রওনা হওয়ার আগে একবার নৌকা নিয়ে সারা শহর চক্কর দেন তিনি। হুমায়ূনের দুই ছেলে, দুই মেয়ে। রাজনীতিপাগল বাবার এ স্বভাব তাঁদের চিরচেনা। এ নিয়ে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই বলেও জানান এই ‘নৌকার মাঝি’।
পিকআপের চালক মেহেদী হাসান এই প্রথম হুমায়ূনের সফরসঙ্গী হন। মেহেদী বলেন, ‘আমাকে প্রতিদিন হিসাবে দুই হাজার টাকা দেওয়ার কথা। ওনাকে বরগুনার সবাই চেনে। আমরা গাড়িতেই রাত্রি যাপন করি। খাওয়াদাওয়া হোটেলে। এভাবেই চলে যায় সময়।’
আজ জনসভা শেষে বিকেলের দিকে বরগুনার উদ্দেশে রওনা দেবেন হুমায়ূন কবির।